আমার বাবা বলে মোটরসাইকেল মানে মরণ সাইকেল। আমি রাতে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখতাম বাইক চালাচ্ছি। ভেবেছিলাম আমার এই স্বপ্ন কখনো বাস্তবে রূপ নেবে না কারণ কলেজে পড়া অবস্থায় আমার বিবাহ হয়ে যায় কিন্তু পড়ালেখা চলতে থাকে। হঠ্যাৎ একদিন আমার স্বামী আর আমি আমার বাবার বাড়ি থেকে শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার পথে কুকুরের সাথে এক্সিডেন্ট করে আমার স্বামীর বাম পা ভেঙ্গে যায় খুবেই খারাপ অবস্থা বাংলাদেশর ডাক্তারা বলে আর কখনো সে হাঁটতে পারবে না।কিন্তু আমি ভেঙ্গে পড়েনি তার উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতে নিয়ে যাই এবং ভালভাবে তার অপারেশন হয়।
ডাক্তার বলে ছয় মাস পরে হাঁটতে পারবে। তখন তার চাকুরীটা নিরুপায় হয়ে ছেড়ে দিতে হয়।তার ঠিক দুই মাসপর আমার চাকুরী হয়। আমার বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ের দূরত্ব ছিল ১৭ কিলোমিটার। তার মধ্যে দুই কিলোমিটার পায়েহাটা একটা ভ্যান ও সে রাস্তায় চলে না। এমতো অবস্থায় আমার অসুস্থ স্বামীকে রেখে প্রতিদিন স্কুল করা খুবেই কষ্টকর ছিল।তখন আমি সিদ্ধান্ত নেই আমি বাইক চালাবো।
যে কথা সেই কাজ সঙ্গে সঙ্গে বাইক কিনে ফেললাম। এবং কিভাবে চালাতে হয় স্বামীর মুখে শুনে একাই চালানো শিখলাম ও তিন দিনের দিন চালিয়ে স্কুলে চলে গেলাম। তারপর থেকে শুরু হলো আমার পথ চলা। ১৫০ কিলোমিটারের মধ্যে হলে বাইক নিয়ে আমি সবখানে যাই।আমার উপজেলায় আমি একমাত্র লেডি বাইকার শিক্ষক আর কেউ নেই। আমি একজন স্কাউটের ট্রেনার। ট্রেনিং করাতে আমাকে বিভিন্ন জেলায় যেতে হয়। ১৩৫ কিলোমিটার পর্যন্ত আমি একা ড্রাইভ করে গেছি ট্রেনিং করাতে। ঈশ্বরের আর্শীবাদে আমি কখনো এক্সিডেন্ট করেনি। সবাই আমার জন্য আর্শীবাদ করবেন।
লক্ষ্মী রানী রায়
সহকারী শিক্ষক,
শ্রীরামপুর কালনা অন্তাবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
0 মন্তব্যসমূহ