মূল্যস্ফীতি, ডলার সঙ্কট ও চোরাকারবারী— এই তিনটিকেই প্রধান কারণ হিসেবে দেখছেন উদ্যোক্তারা। সরকার যেখানে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ নির্মাণের কথা বলছে, সেখানে স্মার্টাফোনের বিক্রি কমে যাওয়াকে আশঙ্কাজনকও বলছেন তারা।
ট্রানশন্স হোল্ডিংস লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজোয়ানুল হক বলেন, গত দুই বছরে মাইক্রো লেভেলে অর্থনীতির কিছু সমস্যা ছিল। আগে যেখানে মানুষ তিন বছরে হ্যান্ডসেট পরিবর্তন করতো, সেখানে এখন দেখা যাচ্ছে ৪ বা ৫ বছরে পরিবর্তন করছে। নতুন ও রিপ্লেসমেন্টের বাজার অনেক কমে গেছে। একদম একান্ত প্রয়োজন ছাড়া মানুষের স্মার্টফোন ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে না।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ও হ্যান্ডসেট ম্যানুফ্যাচার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য বলছে, ২০২১ সালে দেশে নতুন মোবাইল ফোন বিক্রি হয় ৩ কোটি ৭৩ লাখ। ২২ সালে তা কমে ৩ কোটি ৮ লাখে। ২০২৩-এ ১ কোটি ৯০ লাখ পিস।
আর শিল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমানে হ্যান্ডসেট বাজারে ৪০ শতাংশই চোরাকারবারীদের দখলে। এসব অবৈধ কারবারীদের দৌরাত্ন থামিয়ে হ্যান্ডসেট নির্মাণ শিল্পে গতি ফেরাতে চায় টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ৫ শতাংশ যেসব ফোন আমদানি হয়, সেগুলো যেন নিবন্ধিত হয় এবং কেউ যদি শখের বসে বাইরে থেকে কিনে দেশে আসে সেটিও যেন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নিবন্ধন করে— তা কার্যকরে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যাতে আমাদের স্থানীয় শিল্প আমরা রক্ষা করতে পারি।
স্থানীয় উদ্যোক্তাদের অভিমত, ডলারের বিপরীতে টাকার দরপতনে আমদানি ব্যয় বেড়েছে। এছাড়া এলসি জটিলতায় হ্যান্ডসেটের যন্ত্রাংশ আমদানিতেও সঙ্কট দেখা দিয়েছে। যার প্রভাবে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হ্যান্ডসেটের দাম বেড়েছে। ফলে বাজারে বৈধপথে আমদানি ও উৎপাদিত সেটের চাহিদা কমছে।
রেজোয়ানুল হক বলেন, ডলারের রেট বাড়ার কারণে আমরা কিন্তু এলসি খুলতে পারিনি। এছাড়া, বৈশ্বিক বাজারেও মোবাইলের যন্ত্রাংশের দাম বাড়ায় বাংলাদেশেও এর প্রভাব পড়েছে। ডলারের রেট বৃদ্ধির কারণে আমরা দেখেছি, গ্রাহকের যে বাজেট ছিল তারচেয়েও হ্যান্ডসেটের মূল্য বেড়েছে।
বর্তমানে দেশে ১৭ টি দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান হ্যান্ডসেট নির্মাণ করছে। চাহিদার ৯৫ শতাংশ পণ্য প্রস্তুত করছে এসব প্রতিষ্ঠান।
0 মন্তব্যসমূহ