সর্বশেষ খবর

10/recent/ticker-posts

নারীদের কাজের মাধ্যমে বিশ্বের কাছে ভূমিকা রাখবে অপরাজিতা।।BDNews.in


বিডি নিউজ ডেস্কঃ আমাদের সমাজ এখনো পুরোপুরি নারীবান্ধব নয়। 'নারী-পুরুষ সমান অধিকার ' ট্যাগলাইন হাতে নিয়ে এখনো নারীদের হাঁটতে হয় তার অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে। পুরুষতান্ত্রিক সমাজের যাতাকলে বহু নারীই নিজেকে গুঁটিয়ে নেন এক কোণে। কিন্তু কেউ কেউ আবার শত প্রতিবন্ধকতা ঠেলে সোচ্চার হন অধিকার আদায়ে, ছিনিয়ে আনেন সফলতা নামের সোনার হরিণ। তেমনি এক লড়াকু নারী অপরাজিতা মিতি নেওয়াজ। বর্তমানে বাংলাদেশের একজন সফল নারী উদ্যোক্তা। 

অপরাজিতা গ্রুপটি শুধুমাত্রই নারীদের জন্য। নারীদের বিকাশে সহযোগিতা করাই  এই গ্রুপের উদ্দেশ্য। এখানে শুধুমাত্র ক্রয়-বিক্রয় নয়, নারীদের সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়, নারীদের ভালোলাগা, মন্দলাগা, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তিসহ নানাবিধ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়, নিজেদের প্রতিভা মেলে ধরার সুযোগ করে দেওয়া হয়। 

এর মাঝেই চলে আসে মহামারী করনা। ঘরে চুপচাপ বসে না থেকে তৈরি করি অপরাজিতা নামের শুধুমাত্র নারীদের অংশগ্রহণে একটি ফেসবুক গ্রুপ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নারীদের নিয়ে অপরাজিতা গ্রুপের শুরু ৭ই ডিসেম্বর ২০১৯ সাল, তবে পুরোপুরি কার্যক্রম শুরু হয়েছে ২০২০ সালে, ১৭ই মার্চ থেকে। 

যেখানে সকল পেশার নারীরা তাদের হাতে বানানো পণ্য ক্রয় বিক্রি করতে পারেন অপরাজিতা গ্রুপে আমরাই ক্রেতা আমরাই বিক্রেতা। এই গ্রুপের সদস্য সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার। 

কয়েকজন নারী এডমিন/মডারেটর (আফিয়া আফসানা, নিগার সুলতানা, শায়লা আক্তার তিথি, জান্নাতুল ফেরদৌস, জান্নাত জান্নাত, কুসুম সজীব, ফারহানা রহিম রিমি, ফারজানা ফয়েজ) এর অক্লান্ত পরিশ্রম এবং সাধারণ সদস্য হিসেবে নারীদের সার্বিক অংশগ্রহণের মাধ্যমে প্রাণবন্ত হয়ে  উঠেছে আমাদের এই অপরাজিতা গ্রুপটি। 

আমাদের গ্রুপটিতে শুধুমাত্র নিজেদের পণ্যের পোস্ট করেই শেষ নয়, আমরা আমাদের ভালোলাগা, মন্দলাগা প্রাপ্তি, যে কোন বিষয়ে জানতে চাওয়া, রক্তের প্রয়োজনে সাহায্য সহ একে অপরের প্রতিষ্ঠিত হওয়ার গল্প শেয়ার করে থাকি। যার মাধ্যমে একে অপরের প্রতি একটি আস্থার সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। 

তৃণমূলের নারীদের নিয়ে গঠিত অপরাজিতা নেটওয়ার্কের এই নারীদের মাঝে ভবিষ্যতে নারীর ক্ষমতায়নের উজ্জ্বল প্রতিচ্ছবি দেখা যাচ্ছে। সংগ্রামী এসব নারী সর্বস্তরে নারীর ক্ষমতায়নকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে।

এছাড়া সকলের উদ্যোগ গুলোকে ধরে রাখতে,  অনলাইন এর পাশাপাশি অফলাইনেও যেন উদ্যোক্তাদের কাজের সুবিধা সহ বিভিন্ন ধরনের ট্রেনিং গুলোর সাথে সংযুক্ত করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি এবং আমরা একটা ইচ্ছা প্রোষণ করি অফলাইনে একটা প্লাটফর্ম তৈরি করার জন্য এবং যেই ভাবা সেই কাজ আমরা সিদ্ধান্ত নেই " ইচ্ছা মহিলা উন্নয়ন সংস্থা" নামে মহিলা অধিদপ্তর থেকে অনুমোদন গ্ৰহন করার জন্য, যেখানে সবাই স্বশরীরে উপস্থিত থেকে অনেক ধরনের সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। শীঘ্রই মহিলা অধিদপ্তর থেকে অনুমোদন পেয়ে যাবো আশা রাখি। 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হাজার ধরনের গ্রুপ রয়েছে, আমরা স্বাতন্ত্র্য বৈশিষ্ট্য নিয়ে অপরাজিতা হয়েই আগাতে চাই। কারণ, আমরা এই বিশ্বাস রাখি, প্রতিটা নারীই এক একজন অপরাজিতা। 

করোনাকালীন সময়ে অনেক নারীরা নিজেদের  উৎপাদিত পণ্য অপরাজিতায় বিক্রয় পোস্টের মাধ্যমে পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করেছে এবং নিজেদের পরিচিতি বাড়াতে সক্ষম হয়েছে।। ধীরে ধীরে গ্রুপটির সদস্য বৃদ্ধি পাওয়ায়, গ্রুপে বিভিন্ন এক্টিভিটি সহ কনটেস্ট এর আয়োজন করা হয়। কনটেস্টগুলোতে গ্রুপের উদ্দোক্তারাই তাদের প্রোডাক্ট স্পন্সর করে থাকে পুরস্কার হিসেবে। 

গত ১০ ই ফেব্রুয়ারি ২০২৩ সালে, ১২৬ জন সদস্য নিয়ে অপরাজিতা তার প্রথম মিট আপ অনুষ্ঠান আয়োজন করে ধানমন্ডি, ঢাকাতে। এই মিট আপে উদ্যোক্তাদের পণ্য প্রদর্শনের সুযোগ ছিল, সাথে ছিল বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সম্মাননা প্রদান। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, রেফেল ড্র  এবং পুরস্কার বিতরণ এর মাধ্যমে সুন্দরভাবে আমাদের প্রোগ্রামটি সম্পন্ন হয়। 

আমাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, নারীদের কাজের পরিপূর্ণ প্রকাশ, তার মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন। একটা সমাজ যেমন শুধুমাত্র পুরুষের অংশীদারীতে সমষ্টিগতভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া অ-সম্ভব, ঠিক তেমনই নারীর উন্নয়ন ছাড়া দেশের পরিপূর্ণ উন্নয়ন অ-সম্ভব। 

আমরা সকল অপরাজিতা নারীরা একে অপরের সাথে পাশে দাঁড়িয়ে পাশাপাশি চলে একসাথে এক এগিয়ে যেতে চাই। এজন্য প্রয়োজনের সকলের আন্তরিক সহযোগিতা। 

তাই আমরা আমাদের অপরাজিতা নারীদের কাজের মাধ্যমে পুরো বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে তুলে ধরতে চাই। কাউকে অনুকরণ বা অনুসরণ নয়। সবসময় আপনারা সকলে অপরাজিতার পাশেই থাকবেন বলে আশা করছি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ