মারুফ রফি উদ্দিন
========================
অন্নহীন পৃথিবীর বুকে অভুক্ত শিশু
ঝলসে যাওয়া একটা ভাঙা চাঁদ
থেমে থেমে ক্লান্ত চিৎকার
সভ্য মানব প্রহরের কিছু চিত্র,
নাম না জানা সেই শিশুর অপলক দৃষ্টি
ক্ষুধার্ত কুকুরের সাথে ভাগাড়ের পানে।
বিরহী গন্ধমাদন পর্বত শিখরে দাড়িয়ে থাকা
মেঘের নির্মল ছায়ায় বুকফাটা আর্তনাদ,
সোডিয়াম বাতির উজ্জ্বল লোসনাই
নিচে হাড্ডিসার মানবতার মানচিত্র!
আঁকা হচ্ছে নিপীড়িত দেহের ভাঁজে,
এ কেমন বিচার তোমার হে বিধাতা।
সবুজের সমারোহ
বৃক্ষ শাখে নতুন জীবন,
দখিনা সমীরণ প্রাণ জুড়ানো শীতল পরশ,
কাননে কুসুম কলি খেলে অবিরাম
যান্ত্রিক পাখার নিচে উদাস জীবন
হয়তো এরা সুখী
সুখ তাদের জৈবিক বিশ্লেষণ,
তারপরও শূন্যতা পায় ঝলমলে ঝালরের তলায়।
কারা যেনো অপহরণ করছে চাঁদের আলো!
চাঁদের মৃত দেহের ভাঁজে খোঁজে ফিরি
এক চিলতে হাসির নহর,
অভুক্ত পেটে বিষাদের বজ্রপাত
বাগানে ফোটা রক্ত জবা
নির্জাস নিংড়ে প্রচন্ড লালের সমাহার,
মুহুর্তকে ভাগ করি বছরের দাঁড়িপাল্লায়,
ফলাফল রোদ্রের আলোর ঝলকে মিলিয়ে যায়।
মনে হয় গাছ শুদ্ধ চিবিয়ে খাই
রক্তজবার অঞ্জলি,
নিতান্তই ক্ষুধার জ্বালা,
হামাগুড়ি দিয়ে এগিয়ে যাই,
সামনে বসে আছে শকুনির মা
তার সন্তানের ভোজের পাত্র নিয়ে
আমার কঙ্কালসার দেহের
মাংস বিহীন শেষ নিশ্বাসের অপেক্ষায়।
আমি মানুষের জরায়ু হ'তে জন্মেছি
জানতে পেরেছি জন্মের পর
মানুষই আমার পরিচয়
হয়তো আমি শোষিতের দলে
আমার আর কোন অপরাধ নাই,
আমি কিন্তু তোমাদের পৃথিবীতে জন্মেছি
এটা আমারও বাসস্থান,
আমারও অধিকার আছে
ধরনীর সিক্ত হাওয়ায় বেঁচে থাকবার।
তাহলে ওরা কারা
নিজেদের প্রভূত্ব বাসনার
নির্মম চিন্তা চেতনার কুৎসিত মোহে,
বিধাতার জমিনে বসে নিজেদের মানদণ্ডে
আমাকে ক্ষুধার্ত উদরে
লেলিহান মৃত্যুর মিছিলে
ছুড়ে দিচ্ছে বিকলাঙ্গ এক মানবতায়।
0 মন্তব্যসমূহ