রফি উদ্দিন মারুফ
===========================
শৈশব আমাকে ডাকছে কাশবন ঘেরা বালুচরে,
যেখানে একদিন এক স্রোতস্বিনী প্রচন্ড দাপিয়ে
বয়ে যেতো আমার কৈশোর ভেঙে,
আমিও কম বিরক্ত করিনি তাকে,
পালতোলা নৌকার ফাঁক গলে
আমার ছিপছিপে ডিঙি খানা এগিয়ে যেতো
অপরূপা এক খরস্রোতা নদীর বুক চিড়ে।
নদীর ঐপাড়টা মনে হতো
ভূগোল বইয়ে পড়া অন্য কোন মহাদেশ,
ঐ পাড়ের খরস্রোতা তীর ধরে উজান ঠেলে
সামনে এগিয়ে যেতো কোন যান্ত্রিক জাহাজ!
বড় সখ হতো সেই অবুঝ কৈশোরে,
ঐসব জাহাজে করে দিগন্ত ছুঁতে যাবো
নদীর ঘোলা জল পেড়িয়ে।
নদীর ঘোলা জলে ভেসে যেতো
কতো অসহায়ের হাহাকার!
কতো ব্যাথাতুর কান্না, কতো আর্তের আর্তনাদ!!
কতো পীড়িত মানুষের বেদনা!
তখন কি আর এতোসব বুঝতাম!!
আমার সেই দুরন্ত কৈশোরে।
যৌবন ভরা নদী ক্ষিপ্র গতিতে সম্মুখে চলে
ঠিক আমার যৌবনের গানের মতো,
পিছন ফিরে একটিবার তাকানোর চেষ্টা করে না,
আমিও যেমন সেই জাহাজের মাস্তুল ভেঙে
মাটি থেকে কতো সহস্র ফুট উঁচু দিয়ে
ঘুরেছি মহাদেশ থেকে মহাদেশে।
আমার মতো বার্ধক্যে পৌঁছে নিস্তেজ গতি শেষে
থেমে যায় নদী বালুচরে এসে,
যেমনি আমার চলার পথে হাটু ভেঙে বসে পড়ি,
ক্লান্ত পথের বাঁকে নেতিয়ে পড়া দেহ নিয়ে।
0 মন্তব্যসমূহ